গৌরীপুর প্রতিনিধি: ময়মনসিংহের গৌরীপুরে অন্তঃসত্ত্বা গৃহবধূ শেফালী আক্তার হত্যার বিচারের দাবিতে মানববন্ধন কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়েছে। সোমবার (২৭ অক্টোবর) দুপুরে উপজেলা পরিষদের সামনে এলাকাবাসীর আয়োজনে এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।
মানববন্ধনে স্থানীয় সামাজিক সংগঠন, শিক্ষক, ব্যবসায়ী, নারীসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ অংশ নেন। এতে বক্তব্য রাখেন শেফালীর বাবা আব্দুল কদ্দুস, ভাই জিয়াউর রহমান, আলমগীর হোসেন ও লিটন মিয়া প্রমুখ।
বক্তারা অভিযোগ করেন, শেফালীকে পূর্ব পরিকল্পিতভাবে হত্যার আগে একাধিকবার নির্যাতন করা হয়। এমনকি তিনি গৌরীপুর থানায় লিখিত অভিযোগ দিলেও তা আমলে নেয়নি পুলিশ। অভিযোগ রয়েছে থানার এসআই ফেরদৌস শেফালীর কাছ থেকে উৎকোচ দাবি করেছিলেন।
অভিযোগের বিষয়ে গৌরীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) দিদারুল ইসলাম বলেন, বিষয়টি আমার জানা নেই। তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
বক্তারা আরও বলেন, আমাদের বোন ও মেয়েকে যেভাবে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়েছে, তাতে মানবতা লজ্জিত। হত্যাকারীদের দ্রুত গ্রেপ্তার করে সর্বোচ্চ শাস্তি ফাঁসি দিতে হবে।
বক্তারা আরও বলেন, শেফালী কেবল একজন গৃহবধূ নয়, তিনি ছিলেন মা হতে যাওয়া এক নারী। তাঁর হত্যার বিচার না হলে দেশে নারীর নিরাপত্তা থাকবে না।
জানা গেছে, নিহত শেফালী আক্তার গৌরীপুর উপজেলার মাওহা ইউনিয়নের রামকৃষ্ণপুর গ্রামের কাজল মিয়ার স্ত্রী। গত ২৮ সেপ্টেম্বর সকাল সাড়ে ৯টার দিকে পারিবারিক বিরোধের জেরে স্বামী মো. শাহজাহান মিয়া, মোছা. আম্বিয়া, মোছা. কবিতা আক্তার ও মো. রবিকুল ইসলামসহ কয়েকজন শেফালীর উপর হামলা চালায়। হামলায় শেফালীর মাথায় চাপাতির আঘাতে মারাত্মক জখম হয় এবং হাত-পা কেটে হাড় ভেঙে যায়। এ সময় ঘরে থাকা ৫০ হাজার টাকা ও আসবাবপত্র ভাঙচুর করে প্রায় ১০ হাজার টাকার ক্ষতি সাধন করে হামলাকারীরা।
স্থানীয়রা গুরুতর আহত অবস্থায় শেফালীকে উদ্ধার করে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করেন। পরে অবস্থার অবনতি হলে তাঁকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। সেখানে টানা ১৮ দিন মৃত্যুর সঙ্গে লড়ে গত ১৪ অক্টোবর শেফালী মৃত্যুবরণ করেন।
ঘটনার পর নিহতের পিতা আব্দুল কদ্দুস বাদী হয়ে গৌরীপুর থানায় ৮ জনকে বিবাদী করে মামলা দায়ের করেন।
মামলায় উল্লেখ করা হয়, দীর্ঘদিন ধরে পারিবারিক কলহের জেরে শেফালীর জীবনকে নানাভাবে হুমকির মুখে ফেলা হচ্ছিল। হামলার সময় তাঁকে বাঁচাতে গেলে হামলাকারীরা প্রাণনাশের হুমকি দেয় বলেও অভিযোগে উল্লেখ রয়েছে।










