জামালপুরের বকশিগঞ্জ উপজেলার পাখিমারা সরকারবাড়ীর বীর মুক্তিযোদ্ধা, শিক্ষানুরাগী, সাবেক প্রাদেশিক আইন পরিষদ সদস্য বিশিষ্ট আইনজীবি ময়মনসিংহ মহানগর স্বেচ্ছাসেবক লীগের আহবায়ক মোফাখখার হোসেন খোকনের পিতা এ্যাডভোকেট আশরাফ হোসেন (৮৫) বুধবার বেলা ১১.১৫ মিনিটে সিরাজগঞ্জের এনায়েতপুর খাজা ইউনুস আলী ম্যাডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ইন্তেকাল করেন। (ইন্নালিল্লাহি..............রাজিউন)। মৃত্যুকালে তিনি স্ত্রী, ৪ পুত্র এবং ১ কন্যাসহ অনেক আত্মীয়স্বজন ও গুণগ্রাহী রেখে গেছেন।

বিশিষ্ট আইনজীবি, শিক্ষানুরাগী, বীর মুক্তিযোদ্ধা ও সাবেক প্রাদেশিক আইন পরিষদ সদস্য অ্যাডভোকেট আশরাফ হোসেন জামালপুর জেলার বকশিগঞ্জ উপজেলার পাখিমারা গ্রামের সরকারবাড়ীর এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে ১৯৩৭ সালের ২ ডিসেম্বর জন্মগ্রহন করেন।

আশরাফ হোসেন ১৯৫৮ সালে জামালপুর জিলা স্কুল থেকে এসএসসি পাশ করে জামালপুর আশেক মাহমুদ কলেজে ভর্তি হন। ১৯৬০ সালে আইএ এবং ১৯৬২ সালে বিএ পাশ করে ১৯৬৪ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আইন শাস্ত্রের এলএলবি ডিগ্রি লাভ করেন। এলএলবি পাশ করে ময়মনসিংহ বারে যোগ দিয়ে আইন পেশা শুরু করেন।

তিনি ছিলেন কর্মবীর, সফল রাজনৈতিক সব্যক্তিত্ব, একজন আদর্শবান জনপ্রিয় ব্যক্তি গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের মাঝে উল্লেখযোগ্য স্থান দখল করে নিয়েছিলেন তিনি। মেধা, মনন, কর্ম প্রয়াস শ্রম ও অধ্যাবসায়ের মাধ্যমে ব্যবস্থাপনাগত দক্ষতা অর্জনের মধ্য দিয়ে তিনি নিজেকে গড়েছিলেন এক উজ্জ্বল অধ্যায়ে। তিনি জীবনের সুদীর্ঘ সময়ে সংগঠক, সমাজকর্মী এবং সর্বোপরি একজন মেহনতী মানুষের প্রকৃত জনদরদী হিসেবে অতি পরিচিত মানুষ ছিলেন। নিজ মেধা ও ব্যবস্থাপনা যোগ্যতা গুনে একজন রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব হিসেবে উপজেলাবাসীর মন জয় করতে তিনি সক্ষম হয়েছিলেন। সর্বমহলে তাঁর ছিল গ্রহণযোগ্যতা। তিনি নিজের জীবনের ঐশ্বর্য্য ও প্রাচুর্য্যেের কথা ভুলে গিয়ে নিজেকে জনসেবায় আত্ম নিয়োগ করেছিলেন। তিনি ছিলেন সবার প্রিয় অ্যাডভোকেট আশরাফ হোসেন।

তিনি ছাত্র জীবন থেকেই স্বাধীনচেতা ছিলেন। স্কুল জীবনেই ছাত্র রাজনীতির সাথে জড়িয়ে পড়েন। জামালপুর আশেক মাহমুদ কলেজের ছাত্র সংসদের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। শিক্ষা জীবন শেষে আইন পেশার মাধ্যমে কর্মজীবন শুরু করেন। এছাড়া তিনি ছাত্র জীবন থেকেই রাজনীতিতে সক্রিয় ছিলেন। ১৯৫৮ সালে গঠিত ইস্ট বেঙ্গল লিবারেশন ফ্রন্টের অন্যতম নেতা ছিলেন এবং ৫২’র ভাষা আন্দোলনের সাথে যুক্ত ছিলেন। তিনি একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা। ১৯৭০ সালের নির্বাচনে ময়মনসিংহ-১ (বর্তমানে জামালপুর-১) থেকে নির্বাচিত প্রাদেশিক পরিষদ সদস্য (এমপিএ) নির্বাচিত হন। পরবর্তীতে গণপরিষদ সদস্য হন। এশার নামাজের পর মরহুমের জানাজা শেষে বৃহস্পতিবার তাঁর নিজ গ্রামের বাড়িতে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় দাফন সম্পন্ন হবে।

তাঁর মৃত্যুতে দৈনিক সবুজ পত্রিকার সম্পাদক ও প্রকাশক মোঃ আফছর উদ্দিন, ময়মনসিংহ সিটি কর্পোরেশনের মেয়র ও মহানগর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ইকরামূল হক টিট, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এড. জহিরুল হক খোকা, সাধারণ সম্পাদক এড. মোয়াজ্জেম হোসেন বাবুল, মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি এহতেশামুল আলম, সাধারণ সম্পাদক মোহিত উর রহমান শান্ত, জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি এড. নূরুজ্জামান খোকন, সাধারণ সম্পাদক উত্তম চক্রবর্তী রকেট, জেলা যুবলীগ, ছাত্রীলগ, মহানগর যুবলীগ, ছাত্রলীগ, তৃণমূল অঙ্গসংঘটনের নেতৃবৃন্দরা গভীর শোক ও শোক সন্তপ্ত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানিয়েছেন। (স্টাফ রিপোর্টার)