ভালুকা প্রতিনিধি : বিভিন্ন কোম্পানির অপরিশোধিত বর্জ্যে নদীতে ফেলার কারণে ময়মনসিংহের ভালুকায় উপজেলার বুক চিরে প্রবাহিত খিরুনদীর মাছসহ জলজ প্রানি মঙ্গলবার (২৫ আগস্ট) সকাল থেকে ভেসে উঠতে থাকে। এ সময় স্থানীয় লোকজনকে ভেরজালসহ বিভিন্ন ধরণে জাল, জালি দিয়ে এ সব মাছ ধরতে দেখা যায়।

স্থানীয়রা জানায়,খিরু নদীর আশপাশ এলাকায় বেশ কিছু ডাইং ফ্যাক্টরিসহ বিভিন্ন কোম্পানি রয়েছে। কোম্পানির মাঝে রয়েছে বাংলাদেশ তাইওয়ান যৌথ মালিকানাধীন শেফার্ড মিলের ডাইং, আনারস-এলোভেরার জুস কোম্পানি, আর্টি কম্পোজিট, স্কয়ারের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান একটি গার্মেন্ট ফ্যাক্টরি, প্রভিটা ফিড মিল, ইনডেক্স ফিড, মিলবাটারফ্লাই কোম্পানিসহ আরও বেশ কয়েকটি কোম্পানি। এ সব কোম্পানির মাঝে শেফার্ডের ডাইং ও জুস কোম্পানির বর্জ্য সরাসরি খিরু নদীতে গিয়ে পড়ে। মঙ্গলবার থেকে শেফার্ড মিলের আশপাশ এলাকায় মাছসহ জলজ প্রাণি ভাসা শুরু করে।

পর্যায়ক্রমে কয়েক কিলোমিটার জোরে মাছ ভাসতে দেখা যায়। এ সময় নদীতে মাছ ভাসার দৃশ্য দেখা জন্য ভালুকা বাজারে আগত লোকজন ও আশপাশের গ্রামের লোকজন নদীর পার ও খিরু নদীর ব্রীজের উপর ভিড় জমায়।

এ ভরা মৌসুমে খিরুনদী পানিতে টুইটোম্বুর তারপর বিভিন্ন কোম্পানির বিষাক্ত বুর্জ্য মিশ্রিত পানি এ নদীতে ফেলার কারণে সকাল থেকে টেংরা,পুঁটি,টাকি,মলা-ঢেলাসহ বিভিন্ন প্রজাতির মাছ ভেসে ওঠে। এসব মাছ ধরার জন্য আশে পাশের লোকজন বিভিন্ন ধরনের জাল নিয়ে নদীতে নেমে পড়েন।

স্থানীয়দের অভিযোগ ডাইং মিলসহ বিভিন্ন কোম্পানি থেকে অপরিশোধিত বর্জ্য নির্বিচারে নদীতে ফেলার কারণে ভরা মৌসুমে এভাবে মাছসহ জলজ প্রাণি মরে ভেসে উঠছে। শুষ্ক মৌসুমে এ নদীর পানি বিবর্ণ হয়ে কালো ও লালির রং ধারণ করে প্রচন্ড দুর্গন্ধ ছড়ায়। এ দুর্গন্ধ বাতাসে ভেসে আসার ফলে আশপাশের মানুষের জীবন যাপন দুর্বিষ্যহ হয়ে পড়ে।

নদীর পাড়ে বসবাসকারী খারুয়ালী গ্রামের আবুল হাসেম জানান, আমার বর্তমান বয়স ৭০ ঊর্ধ্ব আমি দেখেছি এ নদী দিয়ে বড় বড় লঞ্চ, মাল বোঝাই নৌকা চলাচল করতে এ নদী দিয়ে আমরা নৌকা যোগে সারা বছর যাতয়াত করতাম। নদীটি ছিল উপজেলার মানুষের আশির্বাদ, এখন হয়েছে অভিশাপ স্বরূপ। কয়েক বছর পূর্বে ভরা মৌসুমে এ ভাবেই শেফার্ড মিলের বিষাক্ত পানি নদীতে ফেলার কারণে নদীর মাছ মরে ভেসে উঠেছিল। এবারও সেই রকম ভাবে মাছ ভেসে উঠেছে।

কোম্পানি গুলো এ নদীর পানি বিষাক্ত করায় আমরা কার কাছে বিচার দিবো? স্থানীয় প্রশাসন কি এসব কিছু দেখেন না?

উপজেলা নির্বাহী অফিসার মাসুদ কামাল জানান,আমি বিষয়টি অবগত না। এখনই উপজেলা কৃষি অফিসারকে পাঠাচ্ছি। এ রকম যদি হয়ে থাকে ঘটনটি সত্যিই দুঃখ জনক।