নিজস্ব প্রতিনিধি : ময়মনসিংহের ত্রিশাল উপজেলায় এক নৃশংস ঘটনায় নিজের মাকে গলা টিপে ও বাবাকে কুড়াল দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করেছেন তাদেরই একমাত্র ছেলে রাজু মিয়া। হত্যার পর তিনি বাবা-মায়ের মরদেহ নিজ শোবার ঘরে মাটিচাপা দিয়ে লাশ গোপন করেন।

পুলিশ বৃহস্পতিবার (৯ অক্টোবর) বিকেলে রাজুকে আটক করে। পরে তার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে শোবার ঘরের বিছানার পাশের গর্ত থেকে মরদেহ উদ্ধার করা হয়।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, বুধবার দুপুরে ত্রিশালের বাসকুরি গ্রামে রাজু তার মা বানুয়ারা বেগমকে গলা টিপে হত্যা করেন। পরে রাতে বাবা মোহাম্মদ আলীকেও কুড়াল দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করেন। হত্যার পর দুইজনের মরদেহ নিজের ঘরের মেঝে খুঁড়ে পুঁতে রাখেন তিনি।

পরদিন সকালে রাজু নিজেই তার বোনদের ফোন করে জানান, বাবা-মাকে পাওয়া যাচ্ছে না। বোনেরা এসে খোঁজাখুঁজির একপর্যায়ে রাজুর ঘরে মাটির গর্ত দেখে সন্দেহ হলে স্থানীয়দের সহায়তায় রাজুকে আটক করে পুলিশে খবর দেন।

পরে রাজু পুলিশের কাছে স্বীকার করেন যে তিনিই বাবা-মাকে হত্যা করে ঘরের ভেতরে মাটিচাপা দিয়েছেন। তার দেখানো স্থান থেকে পুলিশ দুইজনের মরদেহ উদ্ধার করে।

স্থানীয়দের বরাতে জানা গেছে, নিহত মোহাম্মদ আলী পেশায় কৃষক ও মাছ ব্যবসায়ী ছিলেন। তিন মেয়ে ও এক ছেলের জনক তিনি।

তাদের একমাত্র ছেলে রাজু দীর্ঘদিন ধরে অনলাইন জুয়ায় আসক্ত। বাবা-মায়ের কাছ থেকে টাকা না পেলে অত্যাচার ও নির্যাতন করতেন রাজু।

এক মাস আগে তার নির্যাতনে স্ত্রী এক মাসের সন্তান নিয়ে বাবার বাড়িতে চলে যান।

ত্রিশাল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুনসুর আহমেদ গনমাধ্যমকে বলেন, ছেলের স্বীকারোক্তি অনুযায়ী তার বাবা-মায়ের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, পারিবারিক কলহ ও মাদকাসক্তির কারণে এ হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হয়েছে।

এদিকে, এই নির্মম হত্যাকাণ্ডে এলাকায় স্তব্ধতা ও ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। প্রতিবেশীরা বলছেন, রাজু প্রায়ই টাকার জন্য মা-বাবার ওপর নির্যাতন চালাতো। এমন ভয়াবহ পরিণতি কেউ ভাবতেও পারেনি।